Saturday, April 19, 2014

দুঃখিনী চেতনা

ভাইজান,অল্প দামে ছেড়ে দিচ্ছি, কিনবেন?
-কিভাবে চিনবেন?
-ভালো চেতনা চেনারতো উপায় নেই;
এই আমাকেই-
করুন বিশ্বাস। ঠকাবো না।
অনেক কষ্টে বুনেছিলাম চেতনার সোনা
যেদিন বুঝতে শিখেছিলাম, সেদিন।
বড় হয়েছি, আর তিলে তিলে বড় করেছি যাকে
এখন সেই চেতনাকে-
বেচে দিচ্ছি পানির দামে।
-নানা না, আর নেই,
বুঝেনিতো মধ্যবিত্তের ঘর;
একটাই চেতনা ছিল, আর সব পর।
অনেক কিছু হারিয়েছি জীবন থেকে-
কবিতার খাতা, প্রেমিকা, ডাক্তার হওয়ার সম্ভাবনা।
তবু বড় হয়েছি স্বপ্ন দেখে-
চেতনার শৌর্যে গড়া রঙিন স্বপ্ন।
-কেন তবে দিচ্ছি বেঁচে?
সে অনেক কথা, সংক্ষেপে বলি
কেন দেওয়া এই জলাঞ্জলি-
শকুন বেড়ে গেছে দেশে,
দল বেঁধে এসে
হাড্ডিসার চেতনাকে করতে চায়
জীবন্ত সাবাড়।
বেচবো না আবার!
আরেক কথা, না বললেই নয়;
দিতেই হবে সততার পরিচয়।
এখনও যে চেতনাটা আমার কাছে!
ভয়হয় পাছে-
-কী যে বলেন! কাঁদবো কেন?
কিসের আবার ভয়-
-আচ্ছা, আচ্ছা, আর ভণিতা নয়,
বলছি খুলে-
পথ ভুলে
৪২ বছরের চেতনা আমার
আঁধার গলিতে হারিয়েছিল দিক,
পুরনো শক্রু চিনে নিল তাকে ঠিক।
তারপর সব শেষ-
দুই লক্ষ কিংবা তারও বেশি সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি,
চেতনার এলোমেলো বেশ।
-কী বলেন! এত কম দাম?
ধর্ষিত চেতনার মূল্য নেই?
সত্য বলার মূল্য দিলেন এই!
-আচ্ছা, যাহোক,
আপনি ভদ্রলোক
আ্যান্টিকের আচ্ছা সমঝদার
কয়েক টাকা বাড়িয়ে দিন না! আর-
-আচ্ছা,আচ্ছা, দিন
এইনিন-
-কোথায় রাখবেন?
মগজে রাখতে না পারলে
রাখুন শো কেসে।
একদিন, বহু দিন শেষে
দেখব এসে
কেমন আছে দুঃখিনী চেতনা আমার।
১৬/০৭/২০১৩,রাত২.০৫,সেলিম মঞ্জিল, রাজশাহী

1 comment: